×

তামাদি আইনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি আদায়ের জন্য মোকদ্দমা দায়ের না করলে তা আইনের দৃষ্টিতে তামাদি হয়ে যায় অর্থাৎ আদালতের মাধ্যমে তা অপ্রতিকারযোগ্য হয়ে যায়।  তামাদি আইন মূলত কোন বিবাদ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে আদালতের  দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ চিরকাল বা অনির্দিষ্টকালের জন্য উন্মুক্ত না রেখে বরং একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা  সংরক্ষনের জন্য করা হয়।    তামাদি আইন ১৯০৮ সালে তৈরি করা হয় এবং ১৯০৯ সালে প্রযোজ্য হয়। বর্তমানে মানে ২৯ টি সেকশন এবং একটি  শিডিউল আছে এবং এই একটি শিডিউলে ১৮৩ টি আর্টিকেল আছে। তামাদি আইনের ২৮ ধারা বাদে কেউ যদি সময় মতো অভিযোগ না করেন তাহলে বৈধ অধিকার হারান এবং আরো কিছু অধিকার হারাবেন কিন্তু অভিযোগের অধিকার  বলবৎ থাকবে। তবে তামাদি আইনের ২৮ ধারা এর ব্যতিক্রম। মিনা, রিমার কাছ থেকে  ১ বছরের জন্য  টাকা নেয়  কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত  দেয় নাই ।   নির্ধারিত সময় কেটে যাবার পরও  মিনার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার না করা হলে মিনার বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের হবে নাহ। কিন্তু রিমা যদি যেকোনো সময় বা কারো মাধ্যমে মিনার কাছ থেকে টাকা ফেরত চায় তো সেক্ষেত্রে সে তা করতে পারে ।  তামাদি আইনের ২৮ ধারায় কারোর সম্পত্তি  যদি ১২ বছরের বেশি কোনো ব্যাক্তি দখলে রাখে কিন্তু সম্পত্তির মালিক যদি  সঠিক সময়ে অভিযোগ না করে সেক্ষেত্রে তামাদি আইন মালিককে  অধিকার দিবে নাহ। তামাদি আইনের ২৮ ধারা বাদে বাকি ধারায় অধিকার রাখে কিন্তু আদায়ের প্রন্থা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তামাদি আইনের ২৮ ধারায় ব্যক্তির অধিকারই থাকে নাহ। 


১৯০৮ সালের তামাদি আইনের প্রথম তফসিলে বর্ণিত তামাদির  নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর কোন মামলার  আপীল বা দরখাস্ত আদালতে পেশ করা হলে উপযুক্ত কারন সাপেক্ষে সেই সময়সীমা  বর্ধিত করা যায় আর একে বলা হয় তামাদি মওকুফ বা বিলম্ব মওকুফ । বিলম্ব মওকুফ করা হলে তামাদির কারণে  অগ্রহনযোগ্য হয়ে পড়া  অর্থাৎ বারিত মোকদ্দমা গ্রহন হতে পারে। 


১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারার কতিপয় ক্ষেত্রে তামাদির মেয়াদ বৃদ্ধিকরণ সম্পর্কে আবেদন করা যায়। যে সকল বিলম্ব মওকুফের আবেদন করা যায় , তা নিম্নরূপ:

(১) আপীল মোকদ্দমা

(২) রিভিউ দরখাস্ত

(৩)রিভিশন দরখাস্ত 

(৪)আপীল করার অনুমতি প্রার্থনার দরখাস্ত এবং

(৫) অন্য কোন আইনে কোন দরখাস্ত যেখানে তামাদি আইনের ৫ ধরা প্রযোজ্য


১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী আদালত  স্বীয় বিবেচনাধীন ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল হয়ে যদি সন্তুষ্ট হয় যে, নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে না আসতে পারার যথেষ্ট কারণ ছিল, তাহলে আদালত মওকুফ করতে পারেন। যথেষ্ট কারন বলতে সাধারণত অসুস্থতা,কারাবাস,সরল বিশ্বাসে ভুল, দারিদ্রতা, কৌসুলীর ভুল,আইনের ব্যাপারে অজ্ঞতা, ভুল আদালতে শুনানী ইত্যাদি বুঝায়। 


একজন দরখাস্তকারী বা প্রার্থীকে মওকুফের জন্য সাধারণত আদালতকে যা দেখাতে হয়:

(১) তিনি যথেষ্ট এবং যথোপযুক্ত কারণে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে আপীল বা দরখাস্ত দাখিল করতে পারে নাই। 

(২) তার কোনরূপ অবহেলা  বা গাফলতি ছিল না

(৩) তার তেমন কোন গুরতর ত্রুটি ছিল না এবং 

(৪) অবহেলাবশ:ত উক্ত ত্রুটি করেন নাই।