রেহেনমুক্তি
রেহেনমুক্ত করার অধিকার ইকুইটি উদ্ভুত। এই ইকুইটিগত অধিকারকে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৬০ ধারায় বিধিবদ্ধ আকারে বাংলাদেশে প্রচলিত করা হয়েছে । রেহেনের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঋণ এবং এ ঋণ পরিশােধের জন্য জামানত হিসেবে ঋণগ্রহীতা তার কোনাে স্থাবর সম্পত্তি ঋণদাতাকে প্রদান করে । তাই ঋণগ্রহীতা অর্থাৎ রেহেনদাতা তার ঋণ পরিশােধ করলেই রেহেন সম্পত্তি ফিরে পায় । সম্পত্তি ফিরে পাবার এ অধিকারকে রেহেনমুক্তির অধিকার বলে । এ অধিকার সম্পর্কে ৬০ ধারায় বর্ণিত আছে যে , রেহেনের টাকা পরিশােধযােগ্য হবার পর যে কোনাে সময় রেহেন মুক্তির অধিকার প্রয়ােগ করা যায় । কাজেই নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও এই অধিকার বিলুপ্ত হয় না । ইকুইটির একটি নীতি বাক্য হচ্ছে, বাহ্যিক আকৃতির চেয়ে অডিপ্রায়কেই ইকুইটি বেশি গুরুত্ব দেয় । যেহেতু রেহেন একটা ঋণের ব্যাপার , ঋণ পরিশােধ করতে না পারলেই তা আপনা আপনি বিক্রিতে পরিণত হয় না । যেহেতু পক্ষগণের অভিপ্রায় ছিল ঋণ , সেহেতু এই ঋণ সুদসহ পরিশােধ করে রেহেনদাতার সম্পত্তি উদ্ধারের অধিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পরও অক্ষুন্ন থাকবে । তাই বলা হয়েছে একদা যা রেহেন , সর্বদাই তা রেহেন । রেহেন হিসেবে যতদিন চিহ্নিত থাকবে , রেহেনদাতার রেহেন মুক্তির অধিকার ততদিন অক্ষুন্ন থাকবে ।
যিনিরেহেনমুক্ত করতে পারে
রেহেনমুক্ত করার অধিকার রেহেনদাতার অবশ্যই থাকবে । এছাড়া রেহেনদাতার নিকট হতে অন্যান্য হস্তান্তর গ্রহীতাও ৫৯( ক ) ধারা বলে এ অধিকার প্রয়ােগ করতে পারে । সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৯১ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে কে রেহেনমুক্তির জন্য মামলা করতে পারে । এগুলি হচ্ছে নিরূপ :
( ক ) রেহেন সম্পত্তিতে স্বার্থ আছে এমন যে কোন ব্যক্তি ।
( খ ) রেহেনমুক্তির অধিকারে স্বার্থ আছে এমন যে কোন ব্যক্তি ।
( গ ) রেহেনের টাকা বা এর অংশ বিশেষ পরিশােধের নিশ্চয়তা দানকারী এমন ব্যক্তি ।
( ঘ ) রেহেনদাতার যে কোনো পাওনাদার যে রেহেন সম্পত্তি বিক্রির জন্য আদালতের ডিক্রি পেয়েছে।
কখন রেহেনমুক্ত করার অধিকার প্রয়োগ করা যায়
যথারীতি ঋণের অর্থ পরিশােধ করে রেহেন সম্পত্তি ফেরত চাইলে রেহেন গ্রহীতা তা প্রত্যাখ্যান করলে রেহেন মুক্তির জন্য মামলার কারণ উদ্ভব হয় । যতদিন রেহেন মুক্তির অধিকার উন্মক্ত থাকবে ততদিন মামলা করার অধিকার থাকবে । তামাদি আইন দ্বারা বারিত হলে বা অন্য কোনাে কারণে এ অধিকার বিনষ্ট হলে রেহেন মুক্তির অধিকার প্রয়ােগ করা যায় না ।