পি এন্ড জি একসময় অনুধাবন করেছিলো যে ফেব্রিজ তাদের অন্যতম অসফল পণ্য। অনুসন্ধাব করে তারা বুঝতে পারলো এর ব্যবহারকারীদের কাছে এর প্রয়োজনীতা তেমন অনুভব হচ্ছে না।তাদের প্রথমে টার্গেট ছিলো যারা ধূমপান করে বা পোষা প্রাণী পালে তাদের গন্ধ দূর করতে মানুষ ফেব্রিজ ব্যবহার করবে। তারা এ নিয়ে গবেষনা করতে গিয়ে দেখলো একজন চল্লিশোর্ধ মহিলা ফেব্রিজ ব্যবহার করেন। তার ঘরে কোন পোষা প্রাণী ছিলো না, কেউ ধূমপান করতো না। তারা চার বাচ্চা যারা তাদের বয়:সন্ধি কাল পার করছিলো। তিনি বললেন তিনি তাদের জন্য ঘর গোছাতে পছন্দ করেন। ঘর গোছানোর পর সর্বশেষ কাজ হিসেবে তিনি এই স্প্রে ব্যবহার করেন। গোছানো ঘর, সুন্দর ঘ্রাণ সব মিলে পরিপূর্ণ।
স্টিমসন সেই ভদ্রমহিলার ঘর গোছানোর কাজ দেখতে অনুমতি চাইলেন। তারা দেখলেনে তিনি প্রতিটি রুম গোছানোর পর ফেব্রিজ স্প্রে করে। তারা বুঝতে পারলে দু সপ্তাহের মধ্যে এই ভদ্রমহিলা এক বোতল স্প্রে শেষ করে। এরপর পি এন্ড জি হাজারের বেশি ভিডিও টেপ সংগ্রহ শুরু করলো। একদিন এক বিজ্ঞানী তাদের টীমকে ডাকলেন। তিনি ভিডিও থেকে একটা ইঙ্গিত বের করলেন।
একটি ভিডিওতে ২৬ বছর বয়স্ক এক ভদ্রমহিলা যার তিনজন সন্তান আছে তিনি প্রথমে বিছানা গোছালেন, তারপর পিলো ঠিক করলেন তারপর একটা হাসি দিয়ে বের হয়ে গেলেন। গবেষক উত্তেজনার সাথে টীমকে জিজ্ঞাস করলো তারা বিষয়টা খেয়াল করেছে কি না। তারপর তিনি আরেকটি ভিডিও ক্লিপ দেখালেন। সেখানে ও এক যুবতী তার ঘর গোছালো এবং হাসি দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। এভাবে আরেকটা ভিডিও ক্লিপে দেখতে পেলেন একজন ভদ্রমহিলা তার ব্যয়ামের পোশাক পরেই তার রান্না ঘর গোছালো কাউন্টার পরিষ্কার করে আরাক করে বসলো। প্রতিটা জায়গা তারা দেখলো তারা পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করে প্রাশন্তির বা সুখের একটা বহিপ্রকাশ ঘটায়। তিনি বললেন আমরা এটাকে ব্যবহার করতে পারি। ফেব্রিজ পরিচ্ছন্নতার সবশেষ কাজ হবে যেটা কাজের পূর্ণতা দিবে। তাই পরিষ্কারের প্রথম ধাপ না হয়ে ফেব্রিজ স্প্রে করা হবে শেষ কাজ। এটা হবে পরিচ্চন্নতার কাজের মজার অংশ।
তারা আরেকটা টেস্ট করে। ফেব্রিজের বিজ্ঞাপনের মূল ফোকাস ছিলো দূর্গন্ধ দূর করা।তারা নতুন মোড়ক প্রিন্ট করলো খোলা জানাল এবং বিশুদ্ধ বাতাসের ঝাপটা। নতুন সুগন্ধি ও যোগ করা হলো।যেন শুধু দূর্গন্ধ দূর না হয় বরং ফেব্রিজের আলাদা একটা সুরভী থাকে। টেলিভিশনে নতুন এ্যাড এলো যেখানে মহিলারা বিছানা গোছানোর পর,কাপড় লন্ড্রি করার পর ফেব্রিজ স্প্রে করতো। তাদের ট্যাগ লাইনে পরিবর্তন আসলো। আগে ছিলো কাপড়ের দূর্গন্ধ থেকে মুক্তি এখন তারা দিলো পরিচ্ছন্ন জীবনের সুগন্ধি। প্রতিটা পরিবর্তন একটা সুনির্দিষ্ট ইঙ্গিতকে লক্ষ্য করে করা হয়েছিলো, রুম পরিষ্কার, বিছানা গোছানো বা কার্পেট পরিষ্কার প্রতিটা কাজে ফেব্রিজ ছিলে প্রতিদান স্বরুপ।
নিজস্ব চিন্তাধারার বিপরীত মোড় নিলো ফেব্রিজ। এটি তৈরী হয়েছিলো দূর্গন্ধ দূর করার জন্য আর এখন এটি বিক্রয় করা হচ্ছে এয়ার ফ্রেসনার হিসেবে। ঘর পরিচ্ছন্ন করার শেষ কাজ হলো এটি। নতুন বিজ্ঞাপন প্রচারিত হবার পর গবেষকরা ক্রেতাদের ঘরে গেলেন এবং দেখলেন তারা পুরনো বোতল বাদ দিয়ে নতুন ফেব্রিজ কিনছে এবং এতে আসক্ত হচ্ছে। একজন ভদ্রমহিলা জানলেন এখন সুগন্ধি ব্যবহার না করলে কিছু পরিচ্ছন্ন মনে হয় না।
ফেব্রিজ নতুন করে ১৯৯৮ সালে আবার বাজারে এলো।দুমাসের মধ্যে তাদের বিক্রি দ্বিগুন হলো আসলে মার্কেটিং এর ধরন এবং আডিয়ার উপর পণ্য বা সেবার গ্রহনযোগ্যতা অনেক নির্ভর করে।