গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বনাম গ্রীণ ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ।
( Giasuddin Ahmed vs Green Delta Insurance Company ltd) 56 DLR (AD)(2004)
আপীল আবেদনকারী ৩১শে অক্টোবর ২নং জবাবদাতার( রেসপন্ডেন্ট) নিকট হতে গ্রীন ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোম্পানির (পাবলিক কোম্পানি) ২২ হাজার শেয়ার কিনে নেন এবং ২ নং জবাবদাতা ঐ কোম্পানির পরিচালক বোর্ডের সদস্য। ১৯৯৯ সালের ২রা নভেম্বর আপীল আবেদনকারী কোম্পানিতে তার শেয়ার ক্রয়ের দলিলাদি জমা দেন এবং২নং জাবাবদাতা ও লিখিত চিঠির মাধ্যমে শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়টি কোম্পানিকে অবহিত করেন।
প্রথম দিকে বিষয়টিকে কোম্পানি গুরুত্ব না দিলেও পরবর্তীতে কয়েকটা বোর্ড মিটিং এ বিষয়টি আলোচনা করা হয় কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন হয় নি।৮৯ নং বোর্ড মিটিং একজন পরিচালক উক্ত শেয়ার রেজিষ্টার না করার মত প্রকাশ করেন এবং পরিচালকদের মধ্যে বন্টন করে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তখনও বোর্ড কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারে নি। পরবর্তীতে ৮ম এ জি এম এ ডেভিডেন্ড ঘোষনা হলে আপীল আবেদনকারী তার ক্রয়কৃত শেয়ারের বিপরীতে ডেভিডেন্ডের জন্য চিঠি দেন কিন্তু বোর্ড আবেদনকারীর অনুরোধ রাখতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে আপীল আবেদনকারী Securites and Exchange Commission(SEC) এর নিকট কোম্পানিকে নির্দেশনা দেবার অনুরোধ করলে কমিশনার চিঠি লিখে নির্দেশনা দেন কিন্তু তাতেও কোম্পানি কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয় নি। ফলশ্রুতিতে আপীল আবেদনকারী প্রথমে লিগ্যাল নোটিশ দেন এবং পরে হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি বেঞ্চে কোম্পানি আইনের ৩৮ ধারার অধীনে আবেদন করেন যা আদালত না মঞ্জুর করে দেন।
পরবর্তীতে ড: কামাল হোসেন লীভ টু আপীলের আবেদনে আদালতকে জানান যে কোম্পানি যদি পাবলিক হয়, Controller of capital শেয়ার হস্তান্তরে বাধা প্রদানে নিষেধ করেন তবে শেয়ার রেজিষ্ট্রেশনে বিবেচনা প্রয়োগ করার অবকাশ নেই, এই বিষয়টি আদালত বিবেচনায় না নিয়ে ভুল করেছেন এবং এই মামলার বিবেচ্য বিষয় জনসাধারনের স্বার্থের জন্য এবং বানিজ্য ও অর্থনীতির জন্য ও দিক নির্দেশনার কাজ করবে। আদালত এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে লীভ প্রদান করেন।
আপীল আদালত দুপক্ষের বক্তব্য ও নথিপত্র বিশ্লেষন করে দেখতে পান যে রেসপন্ডেন্ট বা উত্তরদাতা পরিচালক অসৎ উদ্দেশ্যে ( malafide) কাজ করেছে এবং Controller of capital এর যে নির্দেশনা মেনে নিয়েছিলো তা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখানে শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে বাধা দেয়ার সুযোগ নেই।
Bajaj Auto Ltd vs NK firodia( 1971) 41Comp Cases 1 SC মামলায় আদালতের দিক নির্দেশনাকে আপীল আদালত বিবেচনায় নেন। এই মামলায় আদালত বলেন যে যদিও শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে কোম্পানির সংঘলিপি পরিচালকদের বিবেচনার সুযোগ রাখে তবু সেই বিবেচনা একচেটিয়া বা বেসামাল হতে পারে না। বিবেচনা অবশ্যই ন্যায় ও সঠিক হতে হবে। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার আগে পরিচালকগন কোম্পানির সাধারন স্বার্থ ও শেয়ার হোল্ডারদের সাধারন স্বার্থ বিবেচনায় নিতে হবে।
Re Smith & Fawcett Ltd (1942)ch.304;(1942)All England Report 542 মামলায় আদালত বলেন যে, যেখানে অনিয়ন্ত্রিত ও সম্পূর্ন স্বাধীনতা দেয়া হয় সেখানেও কোম্পানির প্রকৃত স্বার্থেই (bona fide) হস্তান্তর নিষেধ করা যাবে। কোম্পানীর প্রকৃতস্বার্থ ঘটনা হতে বিবেচ্য বিষয় যা শেয়ার বিক্রয় ও হস্তান্তরের আবেদনের উপর নির্ভরকরে পর্যালোচনা করে বের করতে হবে।
চলমান মামলাটিতে সকল পক্ষের যুক্তিতর্ক ও নথিেপত্র বিবেচনা করে আদালত দেখতে পান যে আবেদনকারীর শেয়ার নথিভুক্ত না করার যে সিদ্ধান্ত পরিচালকরা নিয়েছিলেন না গরলবিশ্বাস পূর্বক নেয়া এবং কন্ট্রোলারের দেয়া নোটিশ কোনভাবে আবেদনকারীর নাম রেজিষ্ট্রারে বাধা নয়।